সংবাদ শিরোনাম
মোবাইল আসক্তি ঠেকাতে ও ক্যাম্পাসের পরিবেশ রক্ষায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজে অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ও মোটরসাইকেল নিষিদ্ধ বিজয়নগরে জালনোট তৈরির সরঞ্জামসহ তিনজন আটক ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত ছেলের কবরে বেড়া দিতে গিয়ে মারা গেলেন বাবা।। এলাকায় শোকের ছায়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে শিক্ষা সপ্তাহ’র উদ্বোধন ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরকে সম্প্রসারিত করে পরিকল্পিত নগরায়ন করা হবে: গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী মোকতাদির চৌধুরী এমপি কমলগঞ্জে শমশেরনগরে রেলপথ ঘেষে জমে উঠে অবৈধ পশুর হাট; দুর্ঘটনার আশঙ্কা নেটওয়ার্ক আধুনিকায়নের লক্ষ্যে বাংলালিংক ও হুয়াওয়ের চুক্তি ডেঙ্গু ঠেকাতে সোমবার থেকে মাঠে নামছে ডিএনসিসি অবৈধভাবে ভারতে গিয়ে আটকে পড়া ১৩ বাংলাদেশী দেশে ফিরেছেন শেষ হলো সাহিত্য একাডেমির ৭ দিনব্যাপী “বৈশাখী উৎসব।। সচিব খলিল আহমদকে বৈশাখী উৎসব সম্মাননা প্রদান

প্রনোদনা দিয়েও মাঠ ফাঁকা, মাঠে নেই আউশ ধান

প্রনোদনা দিয়েও মাঠ ফাঁকা, মাঠে নেই আউশ ধান


লালমনিরহাট প্রতিনিধি

প্রনোদনা হিসেবে বিনামুল্যে বীজ ও সার নিয়েও আউশ ধানের চাষাবাদ করেনি লালমনিরহাটের চাষিরা। ফলে সরকারের দেয়া ভর্তৃকীর প্রায় কোটি টাকা কোন কাজেই আসছে না।
জানা গেছে, আমন ও বোরো ধানের মধ্যবর্তি সময়ে জমি ফাঁকা ফেলে না রেখে আউশ ধানের চাষ করে থাকেন কৃষকরা। বীজ বপনের মাত্র একশত দিনের মধ্যে ধান ঘরে তোলা যায়। বোরো ধান তোলার পরে আউশ ধান রোপন করতে হয়। সেচ ছাড়াই বৃষ্টির পানিতে ও সামান্য পরিচর্যা আর অল্প সারে কীটনাশক ছাড়াই এ ধান কৃষকের ঘরে ওঠে। ফলে অল্প খরচে কৃষকরা বোরো ধানের সমপরিমান ধান উৎপাদন করে বাড়তি আয় করার সুযোগ পান।
সেই আউশ ধানে কৃষকদের উৎসাহ বাড়াতে প্রনোদনা হিসেবে লালমনিরহাটের ৫টি উপজেলায় ৬ হাজার ৭৭৬জন চাষিকে জন প্রতি ৫কেজি বীজ ও ২৫কেজি সার বিনামুল্যে বিতরন করে কৃষি বিভাগ। কিন্তু বাস্তবে কোন চাষি এ বছর আউশ ধানের চাষ করেন নি। ফলে বোরো ধান ঘরে তোলার পর থেকে মাঠ ফাঁকা পড়ে রয়েছে চাষিদের। প্রনোদনার তালিকায়ও রয়েছে শুভংকরের ফাঁকি। যাদের জমি নেই বা যারা কখনই চাষাবাদ করেন না এমন লোকদের আউশের প্রনোদনা দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ প্রকৃত চাষিদের। তালিকায় একই পরিবারের একাধিক সদস্যদের নামে উত্তোলন করে এসব বীজ ও সার কালো বাজারে বিক্রি করা হয়েছে বলেও কৃষকদের অভিযোগ। উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা বা কৃষি অফিসের দালালদের নাম রয়েছে এ প্রনোদনায়। ফলে তারা এসব বীজ সার উত্তোলন করে বাজারে বিক্রি করেছেন। কেউ আউশের বীজ নিয়ে চিড়া তৈরী করে খেয়েছেন। স্থানীয় ইউপি সদস্যরা নিজের পরিবারের সকল সদস্যের নামে উত্তোলন করেছেন এ প্রনোদনা। 
আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আব্দুল হামিজের পরিবারে ৪ সদস্যের নামে আউশের প্রনোদনা থাকলেও বাস্তবে চাষাবাদ করেননি তিনি। মহিষখোচা গ্রামে আনছার আলী, বিশ্বনাথ, দিনেশ, জামেনী ও খগেন্দ্র জানান, তারা সবাই আউশের প্রনোদনা পেয়েছেন। কিন্তু কেউ আউশ চাষ করেননি। কারন জানতে চাইলে তারা বলেন, আউশের ফলন কম হয়। প্রনোদনার বীজ রেখে দিলেও সার তামাক ক্ষেতে প্রযোগ করেছেন। এলাকায় কেউ আউশ চাষ করে না। তাই তারাও চাষাবাদ করেননি বলে দাবি করেন।
ওই ইউনিয়নের চাষি তাহাজুল ইসলাম, ছলে মামুদ জানান, আউশের প্রনোদনার জন্য উপ সহকারী কৃষি অফিসারের কাছে অনেক বার গিয়েছেন। কিন্তু চাষ করার জন্য আউশের বীজ পাননি। যারা ভাগ দেয় তাদের নামে এসব প্রনোদনা দেয়া হয়। ভাগ দিতে পারেন নি বলেই তারা  প্রনোদনা পাননি। প্রনোদনা নেয়াদের কাছে আউশের ক্ষেত দেখতে চাইলে দুর্নীতির বাস্তব চিত্র বেড়িয়ে আসবে বলেও দাবি করেন তারা।
সারপুকুরের চাষি হযরত আলী বলেন, প্রনোদনার তালিকা নিয়ে ওই সব চাষিদের কাছে গেলেই তথ্য বেড়িয়ে আসবে। এ ছাড়াও জেলার মাঠগুলোর দিকে তাকালেও তো দেখা যাবে কি পরিমান আউশ চাষ হয়েছে। এত বিপুল পরিমান প্রনোদনা নিয়েও মাঠে আউশের ধান ক্ষেত দেখা যায় না। প্রকৃত চাষিদের প্রনোদনা দিলে তারা অবশ্যই চাষাবাদ করতেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
অভিযোগ রয়েছে ইউপি সদস্য ও উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা পরিচিত জনদের মাঝে এসব প্রনোদনা দিয়ে বিক্রি করে ভাগবাটোয়ারা করে নিয়েছেন। তাই কৃষি বিভাগের খাতায় আউশের লক্ষমাত্রার চেয়ে অধিক চাষাবাদ দেখানো হলেও বাস্তবে শুন্য। যেন কাজির গরু কিতাবে আছে গোয়ালে নেই।
জেলা কৃষি সম্প্রসারন কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের মার্চের শেষ দিকে জেলার ৬ হাজার ৭৭৬জন চাষিকে আউশের প্রনোদনা হিসেবে বিনামুল্যে বীজ ও সার বিতরন করা হয়। চলতি বছর আউশের লক্ষমাত্রা ১১হাজার হেক্টর নির্ধারন হলেও চাষ হয়েছে ১১ হাজার ২৫ হেক্টর জমিতে। কিন্তু কৃষি বিভাগের মনগড়া এ তথ্য মানতে নারাজ চাষিরা। চাষিদের মতে গোটা জেলা মিলে ৫০ হেক্টর জমিতেও আউশের চাষ হয়নি। 
আদিতমারী উপজেলা কৃষি অফিসার আলীনুর রহমান বলেন, তামাক চাষিদের এ প্রনোদনা দেয়া হয়। কারন তামাক তুলে চাষিরা আউশ ধান লাগান। তবে এ বছর চাষাবাদ কম হলেও জেলা বাকী ৪ উপজেলার তুলনায় তার উপজেলায় বেশি হয়েছে। তবে তামাক চাষে নিরুৎসাহিত না করে তামাক চাষিকে প্রনোদনা কেন দিলেন এমন প্রশ্নের কোন মন্তব্য তিনি করেননি।
লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারন অধিদফতরের উপ পরিচালক বিধু ভুষন রায় বলেন, আউশের প্রনোদনার সার তামাক ক্ষেতে ব্যবহার হয়নি। চাষিরা ধান বা অন্যান্য ফসলে ব্যবহার করেছে। প্রনোদনার তালিকায় কোন অনীয়ম হয়ে থাকলে তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।

সংবাদটি পছন্দ হলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 Somoynewsbd24.Com